Tota Roy Chowdhury: ‘মেরুদন্ড বিক্রি করিনি তাই কোনও শিবিরে নেই’ বিস্ফোরক টোটা...
Tota Roy Chowdhury: কমারশিয়াল ছবির হাত ধরে পা রেখেছিলেন টলিউডে। মুক্তির অপেক্ষায় তাঁর হিন্দি ছবি রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি। করণ জোহরের পরিচালনায় আলিয়ার বাবার চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। তার আগে টলিউড নিয়ে ও নিজের কেরিয়ার নিয়ে বোমা ফাটালেন টোটা রায়চৌধুরী।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নব্বইয়ের দশকে বাংলা সিনেমার জগতে পা রাখেন টোটা রায়চৌধুরী(Tota Roy Chowdhury)। তাঁর সমসাময়িক কোনও অভিনেতাই নাচে ও অ্যাকশনে তাঁকে টেক্কা দিতে পারেননি। বয়স বেড়েছে কিন্তু তাঁর ফিটনেস কমেনি বরং বেড়েছে। কমারশিয়াল ছবি থেকে আর্ট ফিল্মে তাঁর উত্তরণ ঘটেছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত ধরে। সম্প্রতি ফেলুদা হয়ে যেমন চমকে দিয়েছেন দর্শককে সেরকমই নজর কেড়েছেন ছোটপর্দায় রোহিত রায় চরিত্রে। এবার মুক্তির অপেক্ষায় তাঁর হিন্দি ছবি ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’। করণ জোহরের পরিচালনায় আলিয়ার বাবার চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে।
সম্প্রতি সিটি সিনেমার এক সাক্ষাৎকারে কমারশিয়াল ছবি প্রসঙ্গে টোটা বলেন, ‘আমি যেকোনও কাজ করার আগে ভাবি আমার দর্শক কী এটা দেখবে? আমি আমার গোটা কেরিয়ারে মাত্র ২ ছবি করেছি টাকার জন্য। সেই সময় ঐ টাকাটা আমার দরকার ছিল। কমারশিয়াল ছবি আমার প্রথম প্রেম। এই নিয়ে কোনও লুকোচুরি নেই। আমি যদি কোনও কিছু দেখাতে চাই, সেটা যদি সাধারণ মানুষ বুঝতেই না পারে তাহলে আর কীসের পান্ডিত্য’!
টোটা আরও বলেন, ‘আমি সেইদলে পড়ি না যাঁরা এসেই এটা চাই ওটা চাই, সব করে তারপর ইএমআইয়ের চক্করে নিজের শিরদাঁড়াটা কারোর কাছে জমা রাখলাম, বিক্রি করে দিলাম। আমি সেই দলে পড়ি যে মনের কথা শোনে। যে সত্যিটা সত্য বলতে পারে, মিথ্যাটাও ধরতে পারে। এই কারণেই আমি কোনও শিবিরে নেই। কম পরি, কম খাই, কম জায়গা থেকে আমন্ত্রণ আসে কিন্তু মাথা উঁচু করে বাঁচব। এটার অন্যই মজা’।
সৃজিত মুখোপাধ্যায় তাঁকে ফেলুদার চরিত্রে বেচেছেন কিন্তু সন্দীপ রায় তাঁর কথা কেন ভাবলেন না? অভিনেতা বলেন, ‘এটা আমার মনে হয়, প্রত্যেক পরিচালকের ভিশনে কেউ কেউ বসে যায়, কেউ কেউ আবার বসে না। এটাও হতে পারে যে যদি আমি টিনটেরোটোর যিশু ছবিটা না করলে উনি আমার কথাও ভাবতেন। অভিনেতা হিসাবে আমার কাছে পরিচালকের ভিশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই তখন পরিচালকের ভিশনটাকে পূর্ণতা দিতে দাঁড়াই। আমার মনে বাবুদা তাঁর ভিশনে আমাকে ফেলুদা ভাবতে পারেননি। নইলে বাবুদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। ওঁর সঙ্গে আমি দুটো ছবি করেছি তাই উনি জানেন যে আমি কি করতে পারি আর পারি না। তাই উনি ওঁর ভিশনে যে যোগ্যতম তাঁকেই নিয়েছেন’।
নতুনদের প্রসঙ্গে টোটার মত, ‘এই বয়সে এসে আমার শিখতে ইচ্ছে করে। নতুন ছেলে এসে ইনস্টা বা ফেসবুকে এসে এমন কিছু করছে যে লক্ষ লক্ষ লোক দেখছে। এটা অনেকেই বলে ক্ষণিকের, কিন্তু না। কারণ ছেলেটা ঐ সেতুটা তৈরি করছে, ওটা আমাদের শিখতে হবে। শুধু কবে কী ঘি খেয়েছি গন্ধ শুঁকে যাব, সেটা চলবে না’।
কিছু কী আফশোস রয়েছে অভিনেতার? টোটা বলেন, ‘আমি আমার জীবনে কিছু মানুষকে ভরসা করে ঠকেছি। এত বেশি কাউকে বিশ্বাস করা উচিত নয়। তারা আমার প্রভূত ক্ষতি করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের স্বার্থটা বুঝে নেওয়া জরুরি। সবাইকে বিশ্বাস করা উচিত নয়। আমি অপাত্রে বিশ্বাস দান করেছি। আমি খুব ছোটবেলায় এই প্রফেশনে চলে এসেছি। কলেজের দ্বিতীয়বর্ষে প্রভাত রায়ের থেকে ডাক পাই। তখন আমি আর্মি জয়েন করার পরিকল্পনায় ছিলাম। উনি আমায় ডেকে কাজ দেন। কিছু না করেই সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলাম। আফসোস যে, আমার আরও শেখা উচিত ছিল। যদি প্রথম থেকেই ঠিক করতাম যে এই প্রফেশনে আসব তাহলে অন্তত পাঁচ বছর থিয়েটার করতাম’।