অভিনয় জীবনের কুড়ি বছরে বাদশা
স্বপ্নকে তাড়া করে মুম্বই চলে এসেছিলেন তিনি, তারপর নিজেই একদিন হয়ে উঠলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। আজ তিনি বলিউডের একমাত্র বাদশা শাহরুখ খান! স্বপ্নের ২০ বছর বলিউডে কাটিয়ে দিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই নায়ক।
স্বপ্নকে তাড়া করে মুম্বই চলে এসেছিলেন তিনি, তারপর নিজেই একদিন হয়ে উঠলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। আজ তিনি বলিউডের একমাত্র বাদশা শাহরুখ খান! স্বপ্নের ২০ বছর বলিউডে কাটিয়ে দিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এই নায়ক।
আজ সে বিশ সাল পহলে.. হিন্দি ছবির চিরন্তন ডায়ালগটি এক্ষেত্রেও এক্কেবারে যথাযথ। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে রূপোলি পর্দা আলো করে রাখলেও বলিউড বাদশার অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ছোট পর্দা দিয়েই। ১৯৯২ সালের ২৫ জুন মুক্তি পেল তাঁর প্রথম ছবি `দিওয়ানা।` তামাম ভারত অবাক হয়ে দেখল অবিন্যস্ত চুল, গালে গভীর টোল, ছটফটে এক অভিনেতাকে। ছেলেটির অস্থির দুটি চোখ, এক নিশ্বাসে ডায়ালগ ডেলিভারি বদলে দিল হিন্দি ছবিতে নায়কের সংজ্ঞা। সেই শুরু তাঁর স্বপ্নের জয়যাত্রা। প্রথম ছবিতেই সেরা নববাগত অভিনেতার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার। এরপর `ডর,` `বাজিগর` একের পর এক হিট ছবিতে শাহরুখের অভিনয় হিন্দি ছবিতে নিয়ে এল অ্যান্টি হিরোর কনসেপ্ট। `বাজিগর`-এর জন্য জীবনের প্রথম সেরা অভিনেতার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারও জেতেন শাহরুখ। আর বলিউড পায় শাহরুখ-কাজলের নতুন জুটিকে। `বাজিগর`-এর দুবছর পর ১৯৯৫ সালে `করণ-অর্জুন`ছবিতে শাহরুখ আবার ফেরেন কাজলের সঙ্গে। তার মধ্যে অবশ্য মাল্টি ট্যালেন্টেড শাহরুখের পরিচয় পেয়ে গেছে বলিউড। `অঞ্জাম` ছবির জন্য নেগেটিভ রোলে সেরা অভিনয়ের পুরস্কার, `মায়া মেমসাব,` `কভি হাঁ কভি না`-র মতো ছবির জন্য ক্রিটিকদের পিঠ চাপরানি ততদিনে জুটে গেছে শাহরুখের ভাগ্যে।
তবে মাত্র একটি ছবির মুক্তি এই সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে বলিউডের একেবারে এক নম্বর আসনে বসিয়ে দিল শাহরুখকে। ১৯৯৫-এ মুক্তি পেল `দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে।` হিন্দি ছবির জন্মলগ্ন থেকে বক্স অফিসের সমস্ত রেকর্ড চুরমার করে শতাব্দীর সবথেকে বড় হিট ছবি হয়ে উঠল ডিডিএলজে। আর সেই সঙ্গেই অ্যান্টি হিরোর তকমা থেকে বেরিয়ে আগাগোড়া রোম্যান্টিক হিরো হয়ে উঠলেন শাহরুখ। এরপর একে একে `কোয়েলা,` `ইয়েস বস,` `পরদেশ,` `দিল তো পাগল হ্যায়` ছবিতে বাজিমাত করেছেন সেই রোম্যান্টিক শাহরুখই। তবে শাহরুখের জীবনের সবথেকে উল্লেখযোগ্য বছর বোধহয় ১৯৯৮। একদিকে `দিল সে` ছবিতে উগ্রপন্থী মেয়ের প্রেমে পড়ে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভোগা অমর, অন্যদিকে `কুছ কুছ হোতা হ্যায়`-তে কলেজ জীবনের প্রেমে মাতোয়ারা তারুণ্যে ভরপুর রাহুল। দুটি চরিত্রেই হৃদয় ছুঁয়ে যান শাহরুখ।
এরপর গত ১৪ বছর ধরে বিভিন্ন ধরণের চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন বাদশা। `মহব্বতেঁ,` `কভি খুশি কভি গম,` `দেবদাস,` `চলতে চলতে,` `ম্যায় হু না,` `কল হো না হো,` `বীর জারা,` `ওম শান্তি ওম,` `রব নে বনা দি জোড়ি,` `কভি অলবিদা না কহেনা`-র মতো রোম্যান্টিক ছবির পাশাপাশি `হে রাম,` `জোশ,` `ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি,` `অশোকা,` `শক্তি দ্য পাওয়ার,` `পহেলি,` `চক্ দে ইন্ডিয়া,` `স্বদেশ,` `বিল্লু বারবার,` `মাই নেম ইজ খান`- এর মতো ছবিতেও নিজের অভিনয় প্রতিভা উন্মোচন করেছেন শাহরুখ। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত সুপারহিট ছবি `ডন`-এর রিমেক ও সিক্যুয়েলে দর্শক পেয়েছে অ্যাকশন হিরো শাহরুখকে। আবার `রা-ওয়ান` ছবিতে জীবনদায়ী থ্রি ডি চরিত্র জি-ওয়ান হয়ে পর্দায় উপস্থিত হয়েছেন তিনি।
আর তাই আজ এ কথা নিঃসন্দেহে বলাই যায় বলিউডে কুড়ি বছর পার করেও শাহরুখের দ্যুতি অম্লান! তাঁর এই স্বপ্নের যাত্রা যেন চিরদিন অটুট থাকে। ভবিষ্যতে আরও অনেক ধরণের চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরুণ তিনি।