চন্দ্রকোনায় ফিল্মসিটি, হুল্লোড় আর চাঁদের হাট
একটাই বাড়ি, একদিকে এয়ারপোর্ট, ঘুরে পিছনে গেলেই হাসপাতাল। কিংবা বাগানে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত্ রক্তাক্ত সোহম বা জিত্। ভয় পাবেন না, মিছি মিছি, শুটিং চলছে যে। সঙ্গে রয়েছে হাজার জয় রাইড এনজয়ের ব্যবস্থা। হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্মসিটিতে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের কাছে এসব নতুন কিছু নয়।
একটাই বাড়ি, একদিকে এয়ারপোর্ট, ঘুরে পিছনে গেলেই হাসপাতাল। কিংবা বাগানে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত্ রক্তাক্ত সোহম বা জিত্। ভয় পাবেন না, মিছি মিছি, শুটিং চলছে যে। সঙ্গে রয়েছে হাজার জয় রাইড এনজয়ের ব্যবস্থা। হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্মসিটিতে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের কাছে এসব নতুন কিছু নয়। শুধু কি সাধারণ ভ্রমণপিপাসু? অন্ধ্রপ্রদেশের রঙ্গারেড্ডি জেলার ২ হাজার একরের ছবির দুনিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত টলিউড থেকে বলিউডের কেউকেটা-চুনো পুঁটি, সবার। সমস্যা একটাই, কলকাতা থেকে দূরত্বটা যে ১,৫০০ কিলোমিটার। ঠেঙিয়ে যাতায়াত করতেই দম ফুরিয়ে যায় অনেকেরই।
তবে এবার থেকে ছবির শ্যুটিং করতে আর পাড়ি দিতে হবে না ভিন রাজ্যে। উল্টে ছবি করতে বাংলায় আসতে হতে পারে দেশ-বিদেশের পরিচালকদের। হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্মসিটির আদলে এই রাজ্যেই গড়ে উঠতে চলেছে প্রয়াগ ফিল্মসিটি। কলকাতা থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় প্রায় ২,৭০০ একর জমির উপর গড়ে উঠবে এ রাজ্যের প্রথম ফিল্মসিটি। চলতি বছরের শেষের দিকেই খুলে যাবে ফিল্মসিটি। আর তার হাত ধরেই হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে রাজ্যের অন্যতম পিছিয়ে পড়া জেলাটি।
আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বুকে গড়ে উঠবে ১০০০ কোটির এই ফিল্মসিটি। তবে কয়েকমাসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার পরই ফিল্মসিটি খুলে দেওয়া হবে ছবি নির্মাতাদের জন্য। প্রয়াগ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভীক বাগচি এদিন বলেন, "শুধুমাত্র বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নয়, বিশ্বমানের ফিল্ম তৈরির সবরকম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন এই নতুন ফিল্মসিটিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলিউডকেও।"
সাউন্ড প্রুফ স্টুডিও ফ্লোরের পাশাপাশি, স্থায়ী আউটডোর ও ইনডোর সেট, কৃত্রিম ল্যান্ডস্কেপ, ডিজিটাল কালার ল্যাব ও ডাবিং স্টুডিও-সহ প্রি ও পোস্ট প্রোডাকশনের সবরকম ব্যবস্থা থাকবে প্রয়াগ ফিল্মসিটিতে। রামোজি ফিল্মসিটির মতো তৈরি হবে বিভিন্ন ধরণের আউটডোর লোকেশনও। থাকবে একটি হেলিপ্যাড, বগিযুক্ত ট্রেনসমেত রেলস্টেশন, গল্ফ কোর্স, সুইমিং পুল, ট্রি হাউস, রেস্টুরেন্ট, কটেজ এবং আরও অনেক কিছু। বাদ যাচ্ছে না ছোট পর্দাও। টেলিভিশনের বিভিন্ন ধারাবাহিক ও রিয়্যালিটি শো শুট করার জন্য থাকবে আলাদা ব্যবস্থা। অভীক বাগচির বক্তব্য অনুযায়ী, ফিল্ম সিটিতে থাকবে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের দল।
বলিউডের বিখ্যাত আর্ট ডিরেক্টর ও রামোজি ফিল্মসিটির ডিজাইনার নীতিশ রায় ডিজাইন করেছেন নতুন এই ফিল্মসিটি। এর মধ্যেই পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে নির্মাণকাজ। এমনকী, রামোজির হোম প্রোডাকশনের ছবি `জলে জঙ্গল`-এর শ্যুটিংও চলছে এখানে। আধুনিক ডিজিটাল টেকনোলজি ও স্পেশ্যাল এফেক্টসের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে ৬০ ফুট লম্বা একটি কুমির। শ্যুটিং-এর পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও আন্তর্জাতিক মানের আতিথেয়তা ও বিনোদনেরও ব্যাবস্থা করবে হোটেল চেন প্রয়াগ গ্রুপ। ট্যুরিস্ট আকর্ষণের জন্য বিস্তির্ণ ক্যাম্পাস জুড়ে থাকছে ১১০টি অসাধারণ নির্মাণশিল্পের নিদর্শন। প্রিভিউ থিয়েটার, ওয়াটার পার্ক, ফুড কোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও হোটেল। ফ্যামিলি এন্টারটেনমেন্টের জন্য তৈরি অ্যামিউজমেন্ট পার্কে থাকবে বিভিন্ন ধরণের ওয়াটার গেমস, গেস্ট হাউস ও মিউজিয়াম। `ফিল্মি দুনিয়া` জোন-এ দর্শকদের জন্য থাকছে `মক্ শ্যুটিং সেসন।`