সুর করা সবথেকে কঠিন, সলিল শুনে কে বলবে!
স্বরূপ দত্ত
সলিল চৌধুরি সেরা সুরকার এটা বলার কথা নয়, কিংবা প্রমাণ করারও তাগিদ নেই কোনও। সেরাকে যুক্তি দিয়ে সেরা বলতে বসিওনি। চেয়েছি শুধু একটু নিজের অনুভবগুলো শেয়ার করতে। আসলে মানুষটা, মানুষটার সুরগুলো যে শুধু শোনার নয়, বড্ড বেশি অনুভব করার। নিজের অনুভবগুলোই তাই তাঁর জন্মদিনে ভাগ করে নেওয়া। আরও একটা ছোট কারণ রয়েছে অবশ্যই। কোথায় যেন মনে হয়, তাঁর যতটা পাওয়ার উচিত ছিল, ততটা তাঁকে বেঁচে থাকতে দেওয়া হয়নি। মরে গেলে তো সবাই ভাল হয়। কিন্তু সলিল চৌধুরিকেও যদি খুব ভাল হতে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে এ সমাজের পক্ষে তা খুবই খারাপ। কারণ, সলিল চৌধুরি এ বাংলায় জন্মানো সেরা বহুমুখী প্রতিভা (রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর পরবর্তী যুগে)।
এবার আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করি, হাজারো অনুভূতির এই মুহূর্তে মনে আসা ১০ অনুভূতি। শুরুতেই বলে রাখা। প্লিজ শুধু পড়বেন না। অনুভব করবেন। কারণ, ওই মানুষটাও আমাদের কয়েক প্রজন্ম ধরে অনুভবই করিয়ে গিয়েছেন। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁকে অনুভব করতে পারাটাই হবে, তাঁর জন্য সেরা উপহার। চলুন, তাহলে শুরু করা যাক —
১) সুর করা সবথেকে কঠিন, সলিল শুনে কে বলবে!
পৃথিবীর সেরা বা সবথেকে ভালোলাগার তিনটে জিনিস কী? এর উত্তর খুব পরিচিত। এক, শিশু। দুই, ফুল আর তিন গান। শিশু সুন্দর, এতে মানুষের ঠিক কতটা অবদান? উত্তর নিজেই ভাবুন। ফুল সুন্দর, এতেই বা মানুষের অবদান কতটা? এবারও আপনিই ভাবুন। তবে, মালির অবদান নিশ্চয়ই মাথায় রাখতে হবে।
গানের ক্ষেত্রে কী বলবেন? এটা প্রকৃতি থেকে পড়ে না। নিজে থেকে হয় না। গান সৃষ্টি করতে হয়। গানের আবার কতগুলো ভাগ রয়েছে। একজন গান লেখেন। তাতে কেউ সুর করেন। সেই গানটা কেউ গান। আর বেশ কিছু মানুষ তাতে বিভিন্ন শব্দযন্ত্র বাজিয়ে গানটিকে যথার্থ গানের মতো হয়ে উঠতে সাহায্য করেন। এই সবকটি অংশের মধ্যে এটা কি খুব একটা যুক্তি দিয়ে বলার দরকার হয় যে, সুর করাটাই সবথেকে কঠিন কাজ?
এবার আসি শুরুর কথায়। সবথেকে ভালোলাগার তিনটে জিনিসের একটি গান। আর সেই গান সৃষ্টির সবথেকে কঠিন অংশটা করেন সুরকার। আর সেই সুরকার, যিনি বেঁচে থাকতে যা সৃষ্টি করে গিয়েছেন, আপনি গুনগুন করে গোটা জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারেন অবলীলায়। শুধুমাত্র সলিল চৌধুরির সুর করা গানগুলো শুনেই।
এরপরও কেন জোর গলায় বলব না, সলিলই রবীন্দ্রত্তর যুগে বাঙালির সেরা প্রতিভা!