চলে গেলেন মেহেদি হাসান (১৯২৭-২০১২)
প্রয়াত হলেন গজল সম্রাট মেহেদি হাসান। বুধবার সকালে করাচির এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বহুদিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত সোমবার তাঁকে করাচির আগা খান হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
প্রয়াত হলেন গজল সম্রাট মেহেদি হাসান। বুধবার সকালে করাচির এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বহুদিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত সোমবার তাঁকে করাচির আগা খান হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও তাঁর শরীরে ফুসফুস ও মুত্রাশয়ের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পী মহলে। পাকিস্তান এবং ভারতে তাঁর অসংখ্য অনুরাগীরাও শোকস্তব্ধ।
১৯২৭ সালে ১৮ জুলাই অবিভক্ত ভারতের রাজস্থানের লুনায় জন্ম হয়েছিল মেহেদি হাসানের। দেশভাগের সময় পাকিস্তানে পাড়ি দিয়েছিল শিল্পীর পরিবার। পিতা উস্তাদ আজিম খান এবং কাকা উস্তাদ ইসমাইল খানের কাছে সঙ্গীতে হাতেখড়ি মেহেদি হাসানের। প্রাথমিক ভাবে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও, খুব অল্প সময়েই গজল শিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে উপমহাদেশের অসংখ্য সঙ্গীতপ্রেমীকে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু আশির দশকে অসুস্থতার পর থেকে ক্রমশ গান গাওয়া কমিয়ে দেন মেহেদি হাসান। ২০০০ সালে শেষবার ভারতে অনুষ্ঠান করেন তিনি। ২০১০ সালে প্রকাশিত সরহদ তাঁর শেষ মিউজিক অ্যালবাম। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে এটিই তাঁর জীবনের একমাত্র যুগলবন্দী। তাঁর গাওয়া গজলগুলির মধ্যে মির্জা গালিব রচিত `দিল-এ-নাদান তুঝে হুয়া কেয়া হ্যায়,` `হামারি সাঁসো মে আজ তক,` `দুনিয়া কিসি কে পেয়ার মে জন্নত সে কম নেহি,` `হর দর্দ কো` কালজয়ী।
সারা জীবনে বহু পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন তিনি। পাকিস্তানে তমঘা-ই-ইমতিয়াজ, হিলাল-ই-ইমতিয়াজ, প্রাইড অফ পারফরম্যান্স ছাড়াও ১৯৭৯ সালে জলন্ধরে সায়গল অ্যাওয়ার্ড ও ১৯৮৩ সালে নেপালে গোর্খা দক্ষিণা বাহু সম্মানেও ভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর গানে বরাররই স্বতন্ত্র আঙ্গিক বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন তিনি। মেহেদি হাসানের মৃত্যুতে গজলে একটা যুগের অবসান হল।