যে পেশাতেই থাকুন না কেন, মানুষ তারকাদের আদর্শ বানান, সেটা ভুললে চলবে না : Koel

২ এপ্রিল মুক্তি পাবে কোয়েলের ছবি 'ফ্লাইওভার'। তার আগে Zee ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে কথা বললেন কোয়েল।

যে পেশাতেই থাকুন না কেন, মানুষ তারকাদের আদর্শ বানান, সেটা ভুললে চলবে না : Koel

অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: শেষবার 'রক্তরহস্য' ছবিতে রেডিও জকি 'স্বর্ণজা'র ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। আর এবার তিনি সাংবাদিক 'বিদিশা'র ভূমিকায়। ২ এপ্রিল মুক্তি পাবে কোয়েলের ছবি 'ফ্লাইওভার'। তার আগে Zee ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে কথা বললেন কোয়েল।

কেমন আছো বলো?

কোয়েল মল্লিক: ভাল আছি (হাসি)।

মা হওয়ার পর এই প্রথম ছবির প্রমোশনে বের হচ্ছেন, ছেলে তো লকডাউনে অনেকটা সময় আপনাকে কাছে পেয়েছে, এখন মিস করছ নিশ্চই?

কোয়েল মল্লিক: আমি তো ওকে মিস করছি। ও বাড়িতে সবার কাছে আদর খাচ্ছে। কথায় তো প্রকাশ করতে পারছে না। এখন দশ মাস বয়স, আর কিছুদিন পরে প্রচুর মিস করবে। তবে ও যখন ঘুমোয়, আর তারপর উঠে দুধ খেয়ে দোলনা চড়ে, সেই সময়টা ও শান্ত থাকে। তাই আমিও বেশিরভাগ কাজ এর মাঝেই রাখি।

আরও পড়ুন-মিথ্যে খুনের মামলায় ফেঁসে 'বিদিশা' Koel, পারবেন কি নির্দোষ প্রমাণ করতে?

'ফ্লাইওভার', আবার একটা থ্রিলার। একের পর এক থ্রিলারে আপনাকে আমরা পাচ্ছি, বিশেষ কোন কারণ?

কোয়েল মল্লিক:  না, পুরোটাই কাকতালীয়। প্রতিটি চরিত্রই একে অপরের থেকে আলাদা, তাই রাজি হয়েছি। এটি খুব সুন্দর ছবি। মানুষ হিসাবে আমি খুব আবেগপ্রবণ। তাই গল্পের ওই দিকটা আমায় নাড়া দিয়েছে। আর কথায় বলে না ক্যাট অ্যান্ড মাউজ চেজ (ইঁদুর-বেড়ালের লড়াই), এই ছবিটা পুরো সেইভাবে চলেছে।

ট্রেলারে দেখা যাচ্ছে আপনার চরিত্রটা আসলে একজন সাংবাদিকের চরিত্র, কীভাবে তৈরি হলেন?

কোয়েল মল্লিক: মেয়েটির শিরদাঁড়া সোজা, খুব শক্তিশালী মেয়ে। সেটা একটা রেফাারেন্স পয়েন্ট ছিল। এছাড়া আমার সাংবাদিক বন্ধুরা রয়েছেন, আপনাদের মত সবাইকেই দেখেছি, কেমন ভাবে আপনারা প্রশ্ন করেন। আর অভিমন্যুর চিত্রনাট্যে যেভাবে চরিত্রের অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, সেটা আমায় সাহায্য করেছে।

এটি একটি রিমেক ছবি, ইউ-টার্নের রিমেক! তা নিয়ে প্রচুর কথাও হয়েছে, আপনার কী মত?

কোয়েল মল্লিক: রিমেক যদি হয়ও, ক্ষতি কী? ভাল ছবি হওয়াটা প্রয়োজন। যে মেজেসটা অন্য ভাষায় দেওয়া হয়েছে তা বাংলায় দেওয়ার চেষ্টা। এমন অনেক হিন্দি সিনেমা দেখেছি ,যেগুলো দক্ষিণী ছবির রিমেক, নামও এক। কিন্তু সেটা নিয়ে তো প্রশ্ন ওঠে না! কোনও একটা গল্প শুনে আমাদের ইচ্ছে হয়, যে এটা যদি আমাদের ভাষায় করতে পারি, বেশ ভাল লাগবে। তাই এটা করা হয়েছে।

ভোটের সময় ছবির মুক্তি কেন? এটা কি ছবিটার মুক্তির জন্য ঠিক সময়?

কোয়েল মল্লিক: রিস্ক না নিলে জীবন কী বলো!  আমরা ছবির ভাগ্য কখনোই ঠিক করতে পারব না। কারণ, ছবির নিজস্ব ভাগ্য থাকে। একেবারে ফাঁকা সময়ে অনেক ছবি এসেছে, কিন্তু সেই ভাবে সাড়া পায় নি। তাই ওটা ভেবে লাভ নেই। ভালো ছবি হলে মানুষ দেখবেনই।

সব বন্ধুবান্ধবই তো কোন না কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে ক্যাম্পেন করছেন। আপনি নেই কেন সেই তালিকায়? আপনার কাছেও তো অফার ছিল!

কোয়েল মল্লিক: আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। প্রত্যেকে তাঁদের নিজের মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং সবাই আমার সহকর্মী। আমার শুভেচ্ছা সকলের জন্য আছে। আমি যোগ না দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ, আমার সন্তান। ওই এখন আমার প্রায়োরিটি। আমি মা। তাই ওকে ছেড়ে আর কিছু ভাবিনি। আর দ্বিতীয়ত, আমার ইন্ডাস্ট্রি, আমার পেশাকে আমি খুব ভালোবাসি। আমি প্রচুর মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। প্রতিদিন দায়িত্ব বেড়ে যায়। এখন আরও বেড়ে গেছে। তাই আপাতত ছেলে, আর ছবির কাজেই আমি মন দিতে চাই।

সকলেই বলছেন মানুষের জন্য কাজ করতে চান। রাজনীতিতে এসে যতটা মানুষকে সাহায্য করা যায়, ততটা একা করা যায় না। সংগঠনের সাহায্য লাগে, আপনারও কি সেই মত?

কোয়েল মল্লিক:  সকলের আলাদা আলাদা মত থাকে। আমি কাউকে ছোট না করেই বলছি, যেভাবে আমি ছোটবেলা থেকে বড় হয়েছি, আমি বেড়ে ওঠার সময়ই মানুষের পাশে থাকতে শিখেছি। এনজিও-র মানে বোঝার বয়স হওয়ার আগে আমি সেই কাজে যুক্ত হয়েছি। আমার এখনও মনে আছে, স্কুল লাইফে গরমের ছুটি বা শীতের ছুটিতে আমার মা আমায় নিয়ে মিশনারিজ অফ চ্যারিটিতে যেতেন। আমি ওঁদের সঙ্গে সময় কাটাতাম, পাশে থাকতাম। আমার ভাল লেগেছে, তাই আমি করেছি, করিও। কিন্তু সেটা বারবার বলতে ইচ্ছে হয় না। আমার পেশার জন্য শুধু একজন অভিনেতা হিসেবে নয়, তারকাদের আদর্শ বানান সাধারণ মানুষ, এটা ভুলে গেলে চলবে না। অভিনেত্রী হলেও আগে একজন মানুষ, তাই সেদিক দিয়ে দেখলেও অনেক দায়িত্ব থাকে।

 মতাদর্শের বদল কি বন্ধুত্বে প্রভাব ফেলে? কী মনে হয়?

কোয়েল মল্লিক: একদমই নয়। সবাই বেশ ম্যাচিওর্ড। যিনি যে দলকে বেছে নিচ্ছেন, তিনি সেই মতাদর্শে বিশ্বাসী। সিনেমার ক্ষেত্রে হিরো এবং ভিলেন প্রতিপক্ষ থাকেন। রিয়েল লাইফে তাঁরা একে অপরের বন্ধুই হন, এটা অনেকটা এরকমই। আমার সবাই ভালো বন্ধু আর বন্ধুই থাকব।

একটি রাজনৈতিক দল বলছে 'খেলা হবে', মিঠুন চক্রবর্তী বলছেন 'আমি জাত গোখরো', সারা নির্বাচন জুড়ে শুধুই সংলাপ..

কোয়েল মল্লিক: আমি কিন্তু শুধুই ফ্লাইওভারের ডায়ালগই বলব......

 

.