জন্মদিনে মাধুরী
এক, দো, তিন গুনতে গুনতে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন জনপ্রিয়তার শিখরে। বলিউড গ্ল্যামক্যুইন জায়গা করেছেন তামাম ভারতবাসীর মনে। হাসির ঝলকে, রূপের চমকে আজও তিনি ভূবনমোহিনী। তিনি মাধুরী। তাঁর ৪৫তম জন্মদিন।
এক, দো, তিন গুনতে গুনতে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন জনপ্রিয়তার শিখরে। বলিউড গ্ল্যামক্যুইন জায়গা করেছেন তামাম ভারতবাসীর মনে। হাসির ঝলকে, রূপের চমকে আজও তিনি ভূবনমোহিনী। তিনি মাধুরী। আজ তাঁর ৪৫তম জন্মদিন।
১৯৮৪ সালে অবোধ দিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু। প্রথম ছবি বক্সঅফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। এরপর টানা ৫ বছর ধরে একের পর এক ছবি ফ্লপ করলেও হাল ছাড়েননি তিনি। ১৯৮৮ তে প্রথম `মেজর` হিট `তেজাব`। এই ছবিই মাধুরীর কেরিয়ারের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন। লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর হৃদয়ে ঝড় তুলে `এক দো তিন` মাধুরীপ্রথমবার নমিনেটেড হন ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কারের জন্য। তবে সবথেকে বেশি নজর কাড়ে এই ছবিতে অনিল কাপুরের সঙ্গে তাঁর কেমিস্ট্রি। শুরু হয় অনিল-মাধুরী জুটির দশক। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এরপর একে একে অনিলের সঙ্গে `রাম লক্ষ্ণণ`, `পরিন্দা`, মিঠুনের বিপরীতে `প্রেম প্রতিতজ্ঞা`র মত হিট ছবিতে অভিনয়ের জোরে দর্শকদের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নেন মাধুরী।
তবে `তেজাব` বা `প্রেম প্রতিজ্ঞা`র জন্য নমিনেটেড হলেও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার তখনও অধরাই ছিল মাধুরীর। সেই স্বপ্ন পূরণ হল ১৯৯০ সালে `দিল`এ। বক্সঅফিসে সুপার ডুপার হিট `দিল` মাধুরীকে এনে দিল শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। তবে ছবি সুপারহিট হলেও দর্শকদের কাছে তেমন সাড়া পায়নি আমির-মাধুরী জুটি। এরপর আর সেরকম কোনও উল্লেখযোগ্য ছবিতে দেখা যায়নি তাঁদের একসাথে। ১৯৯১ সালে মাধুরী-সলমন জুটির `সাজন` ছিল মাধুরীর কেরিয়ারের শ্রেষ্ঠ ছবিগুলির একটি। এই ছবি থেকেই কমিটেড ফ্যান ক্লাব তৈরি হয়ে যায় তাঁর। এরপরেই নানা পাটেকরের সঙ্গে `প্রহার` ছবিতে সম্পূর্ণ `ডিগ্ল্যাম` চরিত্র থেকে অনিল কাপুরের সঙ্গে `বেটা`য় একেবারে `ধক্ ধক্ গার্ল`-এ উত্তরণ মাধুরীর। উন্মুক্ত পিঠের অসাধারণ শরীরী বিভঙ্গে মাধুরী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সময়টা তাঁরই। অনবদ্য অভিনয় আরঅপূর্ব নৃত্যশৈলী মাধুরীকে এনে দিল জীবনের দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। সেই মাধুরীকেই আবারও দর্শক পেল `খলনায়ক` ছবিতে। `ধক্ ধক্ গার্ল`-এর শরীর আবেদন আবারওধরা পড়ল `চোলী কে পিছে`।
মাধুরীর জীবনের সবথেকে স্মরনীয় বছর বোধহয় ১৯৯৪। বক্সঅফিসের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল সুরজ বরজাতিয়ার `হাম আপকে হ্যায় কৌন`। নীতা লুল্লার বেগুনি শাড়িতেমাধুরীর খোলা পিঠের প্রেমে মজল ৮ থেকে ৮০। আর এই ছবিই তৃতীয় ফিল্মফেয়ার এনে দিল মাধুরীর ঝুলিতে। এরপর টানা ৩ বছর ছিল মাধুরীর কেরিয়ারে ফ্লপের বন্যা। দর্শকরা যখন ভাবছেন মাধুরী যুগ বোধহয় এবার শেষ হতে চলেছে, সেই সময়ই `মৃত্যুদণ্ড` ছবিতে জীবনের সবথেকে দৃঢ় চরিত্রে অবতীর্ণ হলেন মাধুরী। বক্মঅফিসে সাফল্য না পেলেও দর্শক পেল এক অন্য মাধুরীকে। সেই বছরই রিলিজ মাধুরীর প্রথম ইনিংসের শেষ মেজর ফিল্ম `দিল তো পাগল হ্যায়`। এরপর `পুকার` ছবিতে প্রভু দেবার সঙ্গে `কে সরা সরা`-তে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টক্কর দিলেও হিট ছবি আর খুব একটা দিতে পারেননি মাধুরী। তিন বছর পর আবার জ্বলে উঠেছিলেন সঞ্জয় লীলা বনশালির `দেবদাস` ছবিতে। যদিও ততদিনে বিয়ে করে প্রবাসী তিনি।
৫ বছর বাদে ২০০৭ সালে মাধুরীর জীবনে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চেয়েছিলেন 'আজা নাচলে' দিয়ে। কিন্তু দর্শক সেভাবে গ্রহণ করেনি তাঁকে। তারপর থেকে ডান্স রিয়াল্যিটি শো-এর বিচারকের ভূমিকাতেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন তিনি। আর এখন দীর্ঘ ৫ বছর পর জীবনের তৃতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন মাধুরী। খুব সম্প্রতি বিশাল ভরদ্বাজের 'দেড় ইশকিয়া'য় সই করেছেন তিনি।
জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে বিফল হয়েও তৃতীয় ইনিংসে নামার সাহস দেখাতে বোধহয় মাধুরীই পারেন। তাও আবার এই মুহুর্তে বক্সঅফিসের সবথেকে সফল অভিনেত্রী বিদ্যা বালনকে সরিয়ে। জন্মদিনে অনেক শুভেচ্ছা রইল তাঁর নতুন ইনিংসের জন্য।