খাঁচার ভিতর বন্দি নারী

ছবির নাম- খাঁচা রেটিং- ***

Updated By: Dec 12, 2013, 05:07 PM IST

শর্মিলা মাইতি

ছবির নাম- খাঁচা

রেটিং- ***

যে সময়ে প্রফুল্ল রায় এই উপন্যাস লিখেছিলেন, তখন নারীর চেহারা ছিল অন্য, তবুও অন্য নয়। সমাজের নিরিখে সেই নারীর অবস্থান বদলেছে স্বল্পই। রাষ্ট্র, আইন এবং প্রশাসন কোনও যন্ত্রই শেষ পর্যন্ত রুখতে পারেনি নারীকে পাচারের বস্তু হিসেবে ব্যবহার করার এই চোরাব্যবস্থাকে। সমাজের নিচু, আরও নিচু অন্ধকারে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যায় জন্ম নেয় যে শিশুকন্যার দল, তারাই দলে দলে হারিয়ে যায় এই পাচারের অন্ধগলিতে..

পাচার-হওয়া নারীকেই বাঁচায় আরেক নারী। সমাজে সে একটু বেশি প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু ঘটনা যত এগোয়, ততই তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসে আর এক কঠিন সত্য- এ সমাজ কোনও নারীকেই পণ্যের ঊর্ধ্বে স্থান দেয়নি। পরিবার ও কর্মক্ষেত্র সব দিক থেকেই ব্যবহার্য সে. সব দিক থেকে খাঁচায় বন্দি জীবন।

কেন্দ্রীয় দুই নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও পার্ণেো মিত্র। প্রত্যন্ত গ্রামের অনাথ মেয়ে পার্ণো, ঋতুপর্ণা তাঁকে পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা করছেন এক নাটকীয় মুহূর্তে, ছবির শুরুতেই। তেমন জোরালো স্ক্রিপ্ট নয় বলেই অভিনয়ের জায়গাটাও কমে এসেছে। বেশিরভাগ সময়েই ফোন বেজে ওঠা আর মোবাইলে কথোপকথনের দৃশ্য বড় একঘেয়ে। চরম নাটকীয় মুহূর্তগুলোও কেমন পানসে মনে হয়। তা সত্ত্বেও এঁরা দুজন যে মানের অভিনয়টা করে দেখালেন সেটাই অবিশ্বাস্য। শক্তিশালী অভিনেতা ঋত্বিকও। কিন্তু তেমন জায়গা পেলেন না নিজের দক্ষতা দেখাবার। শব্দ ছবির পর তেমন ভাল কোনও চরিত্রে অভিনয়ের ডাক পাননি তিনি। রাজা সেনের এই ছবিতে তিনি ২৪ ঘণ্টার সাংবাদিক। নেগেটিভ চরিত্রে অরিজিত্ দত্তও মানানসই। চিত্রনাট্য আরও একটু ঝালিয়ে নিলে আরও ইন্টারেস্টিং হতেই পারত তাঁর চরিত্রও।

পরিচালক রাজা সেন এ ছবির মাধ্যমে সমাজের জন্য যে মেসেজটা রাখলেন সেটা নিঃসন্দেহে নির্ভরযোগ্য। বিশ্বাসযোগ্যও বটে। কিন্তু গল্পের গতির ব্যাপারে আরও নজর দিলে ভাল হত। আরও কাটছাঁট করে দৈর্ঘে প্রস্থে কমানো যেতে পারত।

.