জিও চুলবুল পান্ডে
দাবাং টু এর আগে দর্শক, প্রযোজক, পরিবেশক তিন দলই আড়মোড়া ভেঙে বসেছিলেন। আরও খোলসা করে বললে, রেডি স্টেডি গো হয়েই ছিলেন। শুধু বন্দুকের ফটাশ-টাই বাকি ছিল। কারণ নাম্বার ওয়ান, সলমন খান। সলমন ছুঁলেই সোনা। প্রযোজকের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স একশো কোটি। দর্শকমণ্ডলীর আড়াইশো টাকা উশুল। ডিস্ট্রিবিউটরের শান্তির ঘুম। সলমন স্ক্রিনে মানেই আশার তুবড়ির মশলা আশাতীতভাবে উপর দিকে ওঠে। যে-হারে মাটি ছেড়ে ওপরে উঠছেন চুলবুল পান্ডে, তাতে তাঁকে আধুনিক রজনীকান্ত আখ্যা দিলে খানিক কমই বলা হবে। যাই হোক, দাবাং টু এমন একটি ছবি যার জন্য মিডিয়া হাউস গুলোর ২০১২ রেট্রো প্যাকেজগুলো একটু হল্ট করে ছিল।
শর্মিলা মাইতি
দাবাং টু
রেটিং- *** 1/2
দাবাং টু এর আগে দর্শক, প্রযোজক, পরিবেশক তিন দলই আড়মোড়া ভেঙে বসেছিলেন। আরও খোলসা করে বললে, রেডি স্টেডি গো হয়েই ছিলেন। শুধু বন্দুকের ফটাশ-টাই বাকি ছিল। কারণ নাম্বার ওয়ান, সলমন খান। সলমন ছুঁলেই সোনা। প্রযোজকের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স একশো কোটি। দর্শকমণ্ডলীর আড়াইশো টাকা উশুল। ডিস্ট্রিবিউটরের শান্তির ঘুম। সলমন স্ক্রিনে মানেই আশার তুবড়ির মশলা আশাতীতভাবে উপর দিকে ওঠে। যে-হারে মাটি ছেড়ে ওপরে উঠছেন চুলবুল পান্ডে, তাতে তাঁকে আধুনিক রজনীকান্ত আখ্যা দিলে খানিক কমই বলা হবে। যাই হোক, দাবাং টু এমন একটি ছবি যার জন্য মিডিয়া হাউস গুলোর ২০১২ রেট্রো প্যাকেজগুলো একটু হল্ট করে ছিল। লাগলে একশো কোটি না লাগলে মাইনাস। মানে, ব্যবসা দিলে একশো কোটির লিস্টে সর্বশেষ সংযোজন। না লাগলে এঃ-হে। সলমন ফ্লপ। একশো থেকে শূন্যে লাফ সলমনের। সলমন খানের জয়ের নৌকো খান খান। খানদের কাছে মাথা নোয়ালেন সলমন খান... এমন কতই হেডলাইন হতে পারত। ওঁত্ পেতে বসেও তো ছিল কত ক্রিটিক।
সৌভাগ্যের বিষয়, সে সব কিছুই হয়নি। সব স্পেকুলেশন ফুত্কারে উড়িয়ে ক্রিসমাসের আগেই দিব্য কেকওয়াক করে আরও একখান একশো কোটির ব্যবসা দিলেন সল্লু মিঞা। দাবাং-এর দর্শক তো বটেই, দাবাং না-দেখা দর্শকও নেহাত কৌতূহলের বশে দেখতে এসেই বোল্ড আউট। আউট-অ্যান্ড-আউট এন্টারটেনমেন্ট বলে ইংরেজিতে একটা কথা আছে, যার প্রতি একেবারে অক্ষরে অক্ষরে সম্মান প্রদর্শন করে এই ছবি। একের জায়গায় তিন প্যাকেট পপকর্ন সাবড়ে গেল, আনন্দের চোটে দর্শক টেরই পেলেন না।
সত্যি বলতে কী, দশ বছরে এমন ঠান্ডা পড়েনি বলছেন আবহাওয়াবিদরা। কিন্তু এ ছবি দেখতে বসলে মোটেই সোয়েটার লাগবে না, হলফ করে বলতে পারি। চুলবুল পান্ডের কীর্তিকলাপই মাতিয়ে রাখবে আপনাদের। দাবাং-এর পারফরম্যান্সের চাপ নিজের কাঁধে চেপে বসতেই দেননি সলমন। বয়সকে ক্যালেন্ডারের পাতায় সরিয়ে রেখে, নিজেকে পারফেক্ট এন্টারটেনার করে তোলার পেছনে মন দিয়েছেন। কমিক টাইমিং তো আগেই ছিল তাঁর। ছিল ক্যাপটিভ অডিয়েন্সও। সংলাপের পর সংলাপে হল জুড়ে হাততালি আর সিটি শুনলে এটাই মনে হয়, বলিউডে যতই খারাপ সময় যাক, তাঁর অনুগত দর্শক বরাবরই ছিল। অন্য সব খানদের কীর্তিকলাপ নিয়ে জয়গান গাইতেই ব্যস্ত ছিলেন যখন সাংবাদিকরা, তখন বোধহয় সলমন খানের খামখেয়ালি স্বভাবটা নিয়ে নাড়াচাড়া বেশি হয়েছিল। বিতর্কের আড়ালে যে বিষয়টা আলোতেই আসেনি, তা হল অভিনেতা সলমন খান। প্রতিভার স্বীকৃতি দেরিতে হলেও যে মিলছে, এটাই আশার কথা।
গল্পটা বেশ রসে-টসটস। সব ঘটনা আর সিকোয়েন্সের যে বেশ একটা মানে থাকতে হবে এমন কোনও মাথার দিব্যি দেয়নি কেউ। আবার এমন কোনও মানে-ও বলার চেষ্টা করেননি গল্পকার যার জন্য সহায়িকা বই খুলে দেখতে হবে। মানে-না-থাকার যে আনন্দ, সেটাই আসলে পাই-পয়সা বুঝিয়েছেন চুলবুল পান্ডে সলমন। সঙ্গে বাংলা ভাষায় দুষ্টুমিষ্টি নায়িকা সোনাক্ষি সিনহা। বলার মতো তেমন কোনও রোল নেই, আবার আছেও। দাবাং-এর ফ্রেশ ফেস থেকে এখনও ফ্রেশনেস উধাও হয়নি। লাস্যের প্রলেপ পড়েছে তাতে। বিশেষ করে নাচগানের দৃশ্যে তাঁর পরিশ্রম দেখার মতো। সাবলীল নৃত্যভঙ্গিমা অনেক সময়ে শ্রীদেবীকে মনে পড়ায়। এক কথায়, সমালোচকদের দাবিয়ে দিয়েছে দাবাং টু। নিউ ইয়ারের আগমনের আগেই রিনিউ করেছে বলিউডের বাজার। ফুল-অন এন্টারটেনমেন্টের জন্য তিনটে...উঁহু, সাড়ে তিনটে স্টার। চারটেই বা কেন নয়...? একবার দেখে এসে সাজেস্ট করুন তো। আপনাদের কোর্টে বল।