জিকোর প্রেমটা বেশ, হোঁচট খেল সংলাপে!

Updated By: Jul 21, 2015, 05:02 PM IST
জিকোর প্রেমটা বেশ, হোঁচট খেল সংলাপে!

শর্মিলা মাইতি

ছবির নাম: বেশ করেছি প্রেম করেছি

রেটিং: ***

টলিউডে জি-কো জুটির পুনরাবির্ভাব। চার বছর পর। এটাই দর্শকের কাছে বাড়তি কৌতূহল তৈরি করে দিয়েছিল। নায়িকা কোয়েলের বাবা রঞ্জিত মল্লিকের কেরিয়ারে একটি অন্যতম জনপ্রিয় ছবি মৌচাক। সেই ছবিরই গান থেকে নেওয়া ছবির টাইটেল। আবার পরিচালক রাজা চন্দের রিপোর্ট কার্ডে রংবাজ আর বচ্চন-এর বক্স অফিস সাকসেসের রেকর্ড আছে। সব মিলিয়ে চমক আর প্রত্যাশা দুটোই ছিল বেশ করেছি প্রেম করেছি নিয়ে।

কিন্তু রোম্যান্টিক কমেডির সের্ফ ফর্মুলাই এখানে ব্যবহার করলেন পরিচালক। জিতের চরিত্র আদিত্য। বিয়ের রাতেই বন্ধুর প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। বেনারসে গিয়ে হঠাত্ই আলাপ ডানপিটে মেয়ে রাইয়ের সঙ্গে। কলেজে তাঁর র‌্যাগিংয়ের ঠ্যালায় ছেলেদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। সুন্দরী কলেজগার্ল পটানোর নানা উপায়, মানে যা যা আমরা কমার্শিয়াল ছবিতে দেখে থাকি, সবরকমই ট্রাই করে আদিত্য। তবে ফর্মুলার মধ্যেও কোয়েল দিনকেদিন অসম্ভব ক্যামেরা-ফ্রেন্ডলি হয়ে উঠছেন। অভিনয়ের যে-দিকটায় তিনি বেশ জোর দিয়েছেন, সেটা হল কমিক টাইমিং। বেশ ঘষামাজা, সটান ও সতেজ মনে হল তাঁকে। ভ্যারিয়েশন এনেছেন অভিব্যক্তিতেও।

কোয়েল আর জিতের কেমিস্ট্রিও দারুণ। চোদ্দ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করেছেন, তাই সহজ। নিউ লুক জিতকেও ক্যামেরায় দেখে ফ্যান ক্লাবে নাম লেখাবেন অনেকেই। আগের ছবিগুলোর থেকে জিতকে বেশ আলাদা মনে হয়েছে। কয়েকটি দৃশ্যে মনে হল নিজের অভিনয়টাতেও একটু নতুনত্ব এনেছেন। তবুও বেশ করেছি প্রেম করেছি এমনই একটা ছবি, যেখানে কমেডি আর্টিস্টরাই ট্রফিটা নিয়ে যাবেন। খরাজ মুখার্জি ও বিশ্বজিত্‍ চক্রবর্তীর কথোপকথনের দৃশ্য একটু অন্যরকম বাতাস আনে। জ্যোতিষীর চরিত্রে শুভাশিস মুখার্জিও দারুণ। ছবিতে এঁদের অভিনয়টাও উপভোগ করার মতো। আপাতদৃষ্টিতে ভিলেনের চরিত্র হলেও, কমিক সিকোয়েন্সে আশিস বিদ্যার্থীও কম নন।

তবে কালার প্যালেটটা সুন্দর ব্যবহার করেছেন সিনেমাটোগ্রাফার। বেনারসে সুন্দর সেট ডিজাইনিং, সং সিকোয়েন্সে ক্লোজআপ আর এক্সট্রিম ক্লোজ-আপের অনবদ্য শট ভালই লাগবে।  গানের দৃশ্যে বেশ স্বচ্ছন্দ দুজনেই। স্ক্রিপ্টটা তেমন আশাপ্রদ নয়। সংলাপে এমন সব বাংলা প্রবাদ ব্যবহার করা হয়েছে, যা আজকাল সাধারণ মানের মেগাসিরিয়ালে শোনা যায়। যে ভাষায় আমরা স্বাভাবিক কথাবার্তা বলি না, কাঁচা হাতে লেখা সেই সব সংলাপও কষ্ট করে আওড়াতে হয়েছে অভিনেতা অভিনেত্রীকে। কানে বেশ খটকা লাগে। দ্বিতীয়ার্ধে গল্পের গতিও বেশ স্লো। আরও সড়গড়, স্মার্ট হতেই পারত। ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছতে অনেকটাই সময় লেগে যায়। জিকো জুটির সেরা ছবি বলা যাবে বলে মনে হয় না, তবে অবশ্যই ছুটির মরশুমে সপরিবারে দেখে আসার ছবি।

.