''যা উঠে আসছে তাতে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না'', সুশান্ত মৃত্যু নিয়ে বললেন স্বস্তিকা

তোমার কোনওভাবে মনে হয় সুশান্তের ক্ষেত্রে অবসাদের বিষয়টা থাকলেও থাকতে পারে?

Reported By: রণিতা গোস্বামী | Edited By: রণিতা গোস্বামী | Updated By: Aug 26, 2020, 09:02 PM IST
''যা উঠে আসছে তাতে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না'', সুশান্ত মৃত্যু নিয়ে বললেন স্বস্তিকা

রণিতা গোস্বামী

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করছে CBI। তদন্ত চলাকালীন রোজই উঠে আসছে নানান তথ্য। যদিও সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে 'মানসিক অবসাদ'-এর তত্ত্বই খাড়া করেছিল মুম্বই পুলিস। বর্তমানে মামলা অবশ্য অন্য দিকেই মোড় নিচ্ছে বলা চলে। তবে শেষ ছবি 'দিল বেচারা'র শ্যুটিং চলাকালীন ঠিক কেমন ছিলেন সুশান্ত? তাঁকে কি কখনও আদৌ মানসিক অবসাদগ্রস্ত বলে মনে হয়েছিল? সম্প্রতি অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে 'তাসের ঘর' ছবি নিয়ে কথা বলার সময় আবারও ফিরে এল সুশান্ত প্রসঙ্গ।

'দিল বেচারা' ছবির 'কিজি বসু'র মায়ের চরিত্রে দর্শকদের মন কেড়েছেন। তবে স্বস্তিকা এখন 'সুজাতা'। ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবে তাঁর 'তাসের ঘর' ছবিটি। 'তাসের ঘর'-এর সুজাতাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেই ঘুরে ফিরে উঠে এল সুশান্তের প্রসঙ্গ।

'তাসের ঘর'-এর সুজাতা একা থাকতে ভালোবাসেন। গাছের সঙ্গে কথা বলতে ভালোবাসেন। কোনওভাবে এখানে ও কি অবসাদগ্রস্ত?

স্বস্তিকাকে এ প্রশ্ন করতেই সঙ্গে সঙ্গে বললেন, '' না না, একেবারেই নয়। আমারও তো গাছের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে। অনেকই রয়েছেন, যাদের গাছ খুব প্রিয়। গাছটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁদের জীবনে। অবসাদের সঙ্গে এটার কোনও সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না। আমি জানি না, ২০২০তে এই 'অবসাদ' শব্দটা এত বেশি ব্যবহার হয়েছে। ও ঘুমোচ্ছে, তাহলে হয়ত অবসাদে রয়েছে। ওর শীত করছে, তাহলে হয়ত অবসাদ। এই শব্দটা এখন ব্যবহার করতেও ভয় লাগে আমার। (হাসি) '' 

সুশান্তের ক্ষেত্রেও কিন্তু অবসাদের কথা উঠেছিল, এখন অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। তুমি তো ওকে কাছ থেকে দেখেছ, তোমার কি কখনও এমন মনে হয়েছিল?

স্বস্তিকা : দেখো, কারোর মুখ দেখে কে অবসাদে আছে, আর কে নেই, সেটা বোঝা যায় না। তাঁর সঙ্গে কাজ করি, সংসার করি, তবে সে যদি আমাকে না বোঝাতে চায়, তাহলে বোঝাটা খুবই মুশকিল। অনেক সময় ২৪ ঘণ্টা একসঙ্গে থেকেও বোঝা যায় না। এমন ঘটনার কথাও শুনেছি রাতে একসঙ্গে ডিনার করেছে, তারপরে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। হয়ত দিনের বেলা অফিসে একাধিকবার কথা হয়েছে। ফিরে নেমন্তন্ন বাড়ি যাওয়ার কথা। বাড়ি না ফিরে মেট্রোয় ঝাঁপ দিয়েছে। তাই কার মনে কী চলছে, কাজ করে কী আর বুঝব?

তাহলে কি তোমার কোনওভাবে মনে হয় সুশান্তের ক্ষেত্রে অবসাদের বিষয়টা থাকলেও থাকতে পারে?

স্বস্তিকা : দেখো এখন CBI তদন্ত করছে। যেধরনের তথ্য উঠে আসছে তাতে কিছুই মনে করার অবকাশ নেই। সবকিছুই তথ্য প্রমাণের উপর নির্ভর করছে। তবে যা তথ্য উঠে আসছে, তাতে অন্তত আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না। (গম্ভীর হয়ে)

ব্যোমকেশের সুশান্ত, আর এখন 'দিল বেচারা'র সুশান্তের মধ্যে কোনও কি পার্থক্য দেখেছ?

স্বস্তিকা :  আত্মবিশ্বাসের অনেক পার্থক্য। ব্যোমকেশ ওর তৃতীয় ছবি ছিল। তারপর অনেকটা সময় গেছে, বলিউডে ও প্রথম সারির নায়কদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। তাই আত্মবিশ্বাস তো বেড়েছেই। আমি ৫ বছর আগে যে ব্যক্তিত্বের ছিলাম, এখন কি আর তেমনটা আছি? আগে হয়ত একটা কথা বলার আগে ভাবতাম, বলবো! থাক ছেড়ে দি। এখন মনে হয় কেন ছাড়বো, সবই বলবো, যেটা অন্যায় কেন বলবো না? তেমনই ব্যোমকেশের সুশান্ত 'দিল বেচারা'র সময় অনেক বদলে গিয়েছিল আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে। ব্যোমকেশের পর 'দিল বেচারা'তে অনেক উন্নতি করেছিল ও। সবসময়ই প্রাণবন্ত ছিল। অনেক ভালো কাজ করতে চাইত, কী করতে চায় তা নিয়ে ওর মধ্যে উত্তেজনা ছিল। তবে আবার ও শিশু সুলভ। বয়সের তুলনায় একটু বেশিই ছোট বাচ্চাদের মতো করতো। কাজ নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল। সবটাই তো পজিটিভ দেখেছিলাম, তারপর জানি না, কী যে হল... (একটু থেমে)

'দিল বেচারা'র সময় ওর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল, তেমন কি কোনওরকম দেখেছ?

স্বস্তিকা : না, না, আমি এইরকম কিছুই দেখিনি। এটা সম্পূর্ণ ভুয়ো একটা খবর।

'তাসের ঘর' নিয়ে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের পরবর্তী অংশ আগামী কাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হবে...

.