'ঝুমুর'-এর অস্বিত্ব রক্ষায় এগিয়ে এল মানভূম শিল্পী গোষ্ঠী
তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ঝুমুর গবেষক ও শিল্প অনুরাগীরা। উদ্দেশ্য ঝুমুর সংরক্ষণ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিকৃত হচ্ছে ঝুমুর। বাংলার এই সুপ্রাচীন লোকগীতির গায়ে লাগছে অন্যান্য চলতি গানের ছাপ। এমনটাই মনে করছেন পুরুলিয়ার 'মানভূম শিল্পী গোষ্ঠী'। তাই তাঁদের এই 'প্রাণের' শিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন পুরুলিয়ার 'মানভূম শিল্পী গোষ্ঠী'। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ঝুমুর গবেষক ও শিল্প অনুরাগীরা। উদ্দেশ্য ঝুমুর সংরক্ষণ।
রাঢ় অঞ্চলের এই প্রাচীন লোকগীতির জন্ম প্রায় হাজার বছর আগে। মধ্যযুগেও ছিল ঝুমুরের প্রচলন। 'যুবতী যুথ শত গায়ত ঝুমরী', মধ্যযুগের পদকল্পতরু গ্রন্থের একটি পদের লাইন। পরবর্তীকালে ঝুমুরের সঙ্গে কীর্তন মিশে যায়। প্রচলন হয় যাত্রার। গোবিন্দদাসের পদেও পাওয়া যায় ঝুমুরের উল্লেখ।
আরও পড়ুন-ফের কাঠগোরায় সলমন, সাংবাদিক পেটানোর অপরাধে দায়ের হল মামলা
কিন্তু এখন সেই শিল্প বিপন্ন। নিজের চেনা রূপ হারাচ্ছে ঝুমুর। এপ্রসঙ্গে শুভাশিষ রায় নামে এক ঝুমুর শিল্পীর বলেন, "ঝুমুরের সংরক্ষণের তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। ঝুমুর গানের যে আসল সুর, যে ঘরানা, তার তুলনায় এখনকার ঝুমুরের অনেক পার্থক্য। আগেকার সেই মাধুর্যটাই এখন হারিয়ে গিয়েছে। ভবপ্রীতা, চামু কর্মকার, বরজুরাম দাস, পরেশ কর্মকারের ঝুমুর এখন অতীত।
ঐতিহ্য বজায় রাখতে কোমর বেঁধেছেন পুরুলিয়ার একঝাঁক ঝুমুর শিল্পী। শিল্পী দয়াময় রায় বলেন, ঝুমুরের উৎস, বিবর্তন সবকিছু নিয়ে কাজ করবে 'মানভূম শিল্পী গোষ্ঠী'। পুরুলিয়ার 'ঝুমুর সম্রাট' হিসেবে পরিচিত কিশোর গুপ্ত ঝুমুরের স্বরলিপি তৈরি করেছেন। এইভাবে ঝুমুরের সংরক্ষণ করা সম্ভব। অনেক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা গবেষণা করছেন ঝুমুর নিয়ে। সবারই লক্ষ্য বাঁচাতে হবে ঝুমুর। ফিরিয়ে আনতে হবে সেই পুরোনো সুর। আর অকালে হারিয়ে যেতে দেওয়া হবে না এই লোকসংষ্কৃতিকে।
আরও পড়ুন-ঋত্বিক-শুভশ্রীর প্রেমের গল্প 'পরিণীতা'র মোশন পোস্টারে