Arijita Mukherjee: 'শ্যুটিংয়ের পর অরিত্রদা হাতদুটো ধরে বলেছিলেন, খুব ভালো কাজ হয়েছে বাবু', 'ফাটাফাটি' সাক্ষাৎকারে অরিজিতা
Fatafati: 'ওষুধ খাওয়ানো, ঠান্ডা জল খাওয়ানো, ওআরএস খাওয়ানো - এত আন্তরিকতা ছিল যে কোনওদিন ভুলব না। সেদিন ও সবাইকে খাওয়াচ্ছিল সেদিন কিন্তু আমি তো জল-মুড়ি খাচ্ছিলাম। ঋতাভরী এসে বলল, তুমি এত খেতে ভালোবাসো আর খেতে পারছো না। তোমায় একদিন মটন-ভাত খাওয়াবো।'
দেবস্মিতা দাস: অভিনেত্রী সত্ত্বা যে মজ্জায় তা তাঁর সঙ্গে আড্ডা দিতে বসলেই দিব্যি টের পাওয়া যায়। কথা তো বটেই, সেই সঙ্গে শরীরী ভঙ্গিও জানান দেয় মজা করতে বাস্তবিকই ভালোবাসেন অরিজিতা মুখোপাধ্যায়। 'বাবু… বাবু রে… বাবু…'- এই ডায়গলের কল্যাণে আপাতত ঘরে ঘরে তিনি। এদিন সারাদিনের ক্লান্তি শেষে কফি কাপ হাতে একের পর এক 'ফাটাফাটি' গল্প বলেই চললেন অরিজিতা।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের x= প্রেম ছবিতে বড়পর্দায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। যদিও এর অনেক আগে থেকেই মঞ্চে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। হঠাৎ করেই একদিন উইন্ডোজ অফিস থেকে কল আসে। ব্যস, তারপর বাকিটা স্বপ্নের মতো। প্লাস সাইজ ইস্যুতে তৈরি বাংলার প্রথম ছবির অংশ হয়ে যান তিনি। কিন্তু বডিশেমিং কী ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে নেই? অরিজিতার কথায়, তাঁর বারবারই মনে হয়েছে বেসিক সোশ্যাল চেঞ্জ এসেছে। 'প্রচারের জন্য বলছি না। তবে ২০১৯ এ প্রথম কাজ করতে এসে বডিশেমিং যেভাবে দেখেছিলাম, অনেকেই যাঁরা এগুলো করেছিলেন তাঁদের এই সোশ্যাল অ্যাওয়ারনেসটাই ছিল না। অবশ্যই প্রত্যেকে নন। তবে এখন কিছুটা হলেও অ্যাপ্রোচ বদলেছে।'
আরও পড়ুন, Sushant Singh Rajput: মৃত্যুর দু'বছর পর ফের বড়পর্দা দাপাবেন সুশান্ত
খানিকটা হেসেই অরিজিতার সাফ উত্তর, আগে হয়তো কেউ বলছে 'বাওবা জলহস্তীর মতো মোটা হচ্ছিস'। এটা যে বলতে নেই সেই ধারনাটাই মানুষের মধ্যে নেই। তবে এমন অনেক অ্যাপ্রোচ আছে যা মন ছুঁয়ে যাওয়া- ধরুন কেউ বলছে 'ওজন যে বাড়ছে হাঁটুতে ব্যথা হচ্ছে না। এটা কনর্সানের জায়গা থেকে বলা। বলার ধরনে বদল এসেছে। তারওপর হিন্দিতে এত ছকভাঙা কাজ হচ্ছে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতেও ফাটাফাটি কাজ হচ্ছে। (হাসি)'
শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
অরিজিতা: ফাটাফাটিতে প্রথম দিন উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে আমার দৃশ্যগুলোর শ্যুটিং হয়েছিল। ভীষণ গরমে নন এসিতে কাজ করছিলাম। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সিনের কাজ চলছিল। পুরো কাজটায় অরিত্রদা (পরিচালক) বিশ্বাস করেছেন আমার উপর। কাজের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, কীভাবে চরিত্রটা ভাবছি জানতে চাওয়া হয়। কাট টু তার দিন সাতেক পরে টালিগঞ্জের এক বাড়িতে ছবিটার অন্য় দৃশ্যের শ্যুটিং করছিলাম। অরিত্রটা সেদিনও এসে হাতদুটো ধরে বললেন, বাবু খুব ভালো কাজ হয়েছে। এতদিন পরেও পরিচালক এটা মনে রাখবেন ভাবিনি।
ঋতাভরীর সঙ্গে কাজ করেছেন। এমন কোনও স্মৃতি তৈরি হয়েছে যা মনে রয়ে যাবে...
অরিজিতা: ঋতাভরীর প্রথমদিকে কাজের চাপ ছিল আস্তে আস্তে সম্পর্কটা তৈরি হয়েছে। শেষদিনের শ্যুটিংয়ে মারাত্মক অসুস্থ ছিলাম। একটা করে শট দিয়ে বাথরুমে যাচ্ছিলাম। এত গরমে পেটের অবস্থা শোচনীয় ছিল। সেদিন ঋতাভরী রীতিমতো আমার সেবা করেছিল। আমি কৃতজ্ঞ ওর কাছে। ওষুধ খাওয়ানো, ঠান্ডা জল খাওয়ানো, ওআরএস খাওয়ানো - এত আন্তরিকতা ছিল যে কোনওদিন ভুলব না। সেদিন ও সবাইকে খাওয়াচ্ছিল সেদিন কিন্তু আমি তো জল-মুড়ি খাচ্ছিলাম। ঋতাভরী এসে বলল, তুমি এত খেতে ভালোবাসো আর খেতে পারছো না। তোমায় একদিন মটন-ভাত খাওয়াবো।
তাছাড়া সংঘশ্রী, দেবশ্রী আর আমি - খুব মজা করেছি। মজাদার দু'জন বন্ধু হল। সোমাদির সঙ্গে কাজ করতে পারাটা প্রাপ্তি।
তাহলে ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধুত্ব হয়?
ফাটাফাটির রিঙ্কুদির বক্তব্য, 'আমার নাম অরিজিতা, শত্রুকে জয় করি আমি। মা আমাকে এই নামটা দিয়ে কাজ বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার খুব একটা শত্রুতা হয় না।' প্রসঙ্গত, ফাটাফাটি ছবিতে একজন প্লাস সাইজ মডেলের গল্প উঠে আসবে। নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রযোজিত এবং অরিত্র মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘ফাটাফাটি’ মুক্তি পাচ্ছে ১২ মে।
আরও পড়ুন, Rupa Ganguly: তিন মাসেই মেয়েবেলা থেকে সরলেন রূপা, এবার বিথী মাসি কে?